ওজন বাড়ানোর উপায়: দ্রুত ও প্রাকৃতিকভাবে ওজন বাড়ানোর সেরা পদ্ধতি

Avatar

Published on:

ওজন বাড়ানোর উপায়: দ্রুত ও প্রাকৃতিকভাবে ওজন বাড়ানোর সেরা পদ্ধতি

ওজন বাড়ানোর উপায়: দ্রুত ও প্রাকৃতিকভাবে ওজন বৃদ্ধির সেরা পদ্ধতি

ওজন কম থাকার কারণ

ওজন কম থাকার অনেক কারণ থাকতে পারে। এর মধ্যে কিছু সাধারণ কারণ নিচে উল্লেখ করা হলো:

  1. সঠিক খাদ্যাভ্যাসের অভাব: ওজন বাড়াতে হলে অবশ্যই প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করা উচিৎ। অনেকেই সঠিক খাদ্যাভ্যাসের অভাবে কম ওজনের হয়ে থাকেন। আপনি যদি আপনার শরীরের চাহিদার তুলনায় কম খাবার গ্রহণ করেন তাহলে আপনার ওজন কম হবে এটাই স্বাভাবিক।

  2. মানসিক চাপ: মানসিক চাপের কারণে শরীরের স্ট্রেস হরমোন প্রভাবিত হয়। এর ফলে ওজন কমে যাওয়ার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে।

  3. পর্যাপ্ত বিশ্রামের অভাব: পর্যাপ্ত ঘুম শরীরের বৃদ্ধি ও বিকাশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পর্যাপ্ত পরিমান ঘুম ও বিশ্রামের অভাবেও ওজন কমে যেতে পারে।

  4. রোগ বা শারীরিক সমস্যা: কিছু রোগ বা শারীরিক সমস্যার কারণে ওজন কমে যেতে পারে। যেমন: থাইরয়েডের সমস্যা, ক্যান্সার, ডায়াবেটিস, ইত্যাদি।

  5. ঔষধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া: নির্দিষ্ট কিছু ঔষধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবেও ওজন কমে যাওয়ার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে।

ওজন বাড়ানোর উপায়

ওজন বাড়াতে হলে নিম্নলিখিত পদক্ষেপগুলো অনুসরণ করতে পারেন:

  1. পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করুন: ওজন বাড়াতে হলে প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করতে হবে। আপনার খাদ্যতালিকায় উচ্চ ক্যালরিযুক্ত খাবার রাখুন। যেমন: মাছ, মাংস, ডিম, দুগ্ধজাতীয় খাবার, বাদাম, বীজ, শস্যজাতীয় খাবার (ভাত, আলু, ইত্যাদি), ফলমূল।

  2. নিয়মিত খাবার খান: দিনে পাঁচ-ছয়বার ছোট ছোট খাবার খান। দীর্ঘ সময় না খেয়ে থাকলে শরীরের মেটাবলিজম কমে যায় এবং ওজন বাড়ানো কঠিন হয়ে পড়ে।

  3. সঠিক সময়ে খাবার খান: প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে খাবার খান। সঠিক সময়মতো খাবার খাওয়ার ফলে আপনার শরীরের মেটাবলিজম ঠিক থাকবে এবং ওজন বাড়ানো অনেকটাই সহজ হবে।

  4. শর্করাজাতীয় খাবার গ্রহণ করুন: ওজন বাড়াতে হলে অবশ্যই শর্করাজাতীয় খাবার বেশি পরিমানে গ্রহণ করতে হবে। শর্করা বা কার্বোহাইড্রেট শরীরের শক্তির প্রধান উৎস। প্রতিদিন আপনার শরীরের ওজনের প্রতি কেজির জন্য ৩-৪ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট গ্রহণ করুন।

  5. প্রোটিন গ্রহণ করুন: প্রোটিন বা আমিষ জাতীয় খাদ্য পেশি ও মেদ গঠনে সাহায্য করে। তাই ওজন বাড়াতে হলে প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করুন। যেমন; ডিম, মুরগি, মাছ, মাংস, ডাল ইত্যাদি।

  6. খাবার গ্রহণের আগে পানি পান করুন: খাবার গ্রহণের আগে এক গ্লাস পানি পান করুন। এতে খাবারের পরিমাণ বেড়ে যাবে এবং আপনি বেশি ক্যালরি গ্রহণ করতে পারবেন।

  7. নিয়মিত ব্যায়াম করুন: শারীরিক ব্যায়াম শরীরের ডাইজেস্টিভ সিস্টেম বা পরিপাক ক্রিয়াকে উন্নত করতে সাহায্য করে ফলে ক্ষুধার অনুভব তৈরি হয়। নিয়মিত ব্যায়াম করলে পেশি গঠন হয় এবং ওজন বাড়ে।

ওজন বাড়ানোর খাদ্য তালিকা

সকালের নাস্তাদুপুরের খাবারস্ন্যাকসরাতের খাবার
দুধ বা দইভাত, মাছ বা মাংসমৌসুমি ফল বা বাদামভাত, মাছ বা মাংস
ওটমিল বা পাউরুটিডাল ও সবজিস্ন্যাকস: বাদাম, বীজসবজি ও ডাল
ডিম বা ফলভাজা খাবার; সিংগারা, সমূচা ইত্যাদি

ওজন বাড়ানোর ব্যায়াম

  1. স্কোয়াট: এটি শরীরের নিম্নভাগের পেশীগুলিকে শক্তিশালী করে।
  2. ডেডলিফট: এটি শরীরের নিম্নভাগের পেশীগুলিকে শক্তিশালী করে।
  3. প্রেস: এটি শরীরের উপরের অংশের পেশীগুলিকে শক্তিশালী করে।
  4. প্রোলিং: এটি শরীরের পিছনের অংশের পেশীগুলিকে শক্তিশালী করে।
  5. পুশ-আপ: এটি শরীরের উপরের অংশের পেশীগুলিকে শক্তিশালী করে।

ওজন বৃদ্ধি সম্পর্কিত কিছু গুরুত্তপূর্ণ প্রশ্নোত্তর

প্রশ্ন ১: ওজন বাড়াতে কি কি উপায় অনুসরণ করতে পারি?

উত্তর: প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় উচ্চ ক্যালরিযুক্ত খাবার যোগ করুন। দিনে পাঁচ-ছয়বার ছোট ছোট খাবার খান। দুধ, দই, মাখন, পনির, ডিম ইত্যাদি খাদ্যতালিকায় রাখুন। বাদাম, বীজ, শুকনো ফল, চকোলেট ইত্যাদি স্ন্যাকস হিসেবে খেতে পারেন। শর্করাজাতীয় খাবার নিয়মিত খেতে হবে তবে অতিরিক্ত পরিমাণে খেতে হবে না। শক্তিবর্ধক ব্যায়াম করুন। পর্যাপ্ত ঘুমান ও স্ট্রেস নিয়ন্ত্রনে রাখুন।

প্রশ্ন ২: ওজন বাড়ানোর সময় কি কি সতর্কতা অবলম্বন করা উচিৎ?

উত্তর: দ্রুত ওজন বাড়াতে গেলে স্বাস্থ্যের ক্ষতি হতে পারে। হাড়ের সমস্যা থাকলে ডাক্তারের পরামর্শ নিন। অতিরিক্ত ক্যালরি গ্রহণের ফলে শরীরে চর্বি জমতে পারে। পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ, নিয়মিত শরীরচর্চা এবং সঠিক জীবনযাপন পদ্ধতি মেনে চলুন।

আমাদের শেষ কথা

ওজন বৃদ্ধি একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়া। দ্রুত ওজন বাড়ালে শরীরের ক্ষতি হতে পারে। তাই ধীরে সুস্থে সঠিক পরিকল্পনার সাথে ওজন বৃদ্ধি করা উচিৎ যা স্থায়ী হবে এবং শরীরের ক্ষতি করবে না।

Related Posts

সঙ্গে থাকুন ➥